উলিপুর প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা।তিস্তা ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদী বেষ্টিত এই উপজেলায় প্রায় পাচ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই সরকারী হাসপাতালটি।
কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় সাধারণ মানুষ কে বাধ্য হয়েই এই উপজেলার বাইরে গিয়ে জেলা সদর হাসপাতাল বা বিভাগীয় সরকারী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ জন চিকিৎসকের বিপরীতে মাত্র ৪ জন চিকিৎসক আছেন।
বাকী ২২ জন চিকিৎসক শুন্যতা নিয়ে কোন রকমে টেনে টুনে স্বাস্থ্যসেবা পরিচালনা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মাত্র ৪ জন চিকিৎসক থাকলেও তারা আবার বেশী অভিজ্ঞও নন।
এছাড়াও এই হাসপাতালে মোট দ্বিতীয় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৭৭টি পদ থাকলেও তার মধ্যে ১০৪টি পদই শুন্য রয়েছে।
এর ফলে চিকিৎসক ও প্রশাসনিক জনবল সংকটের কারণে উলিপুর উপজেলাবাসী প্রত্যাশিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উলিপুর উপজেলার সাধারণ মানুষ।
বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩০০/৩৫০ জন রোগী বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসেন।
সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত রোগীরা অপেক্ষা করেও প্রত্যাশিত ডাক্তারের দেখা না পেয়ে অনেকে দু:খ কষ্ট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফিরে যান।এভাবেই প্রতি নিয়ত চলছে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবাদান কার্যক্রম।
শিমু আক্তার নামের একজন প্রসূতি বোন চিকিৎসা সেবা নিতে এসে ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করেও ডাক্তারের দেখা না পেয়ে সাংবাদিকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমরা অসহায় গরীব মানুষ তাহলে কি চিকিৎসার অভাবে মারা যাবো?
চিকিৎসা নিতে আসা রাহেলা বেগম জানান এই হাসপাতালে কেউ যেন চিকিৎসা নিতে না আসে।নার্সদের দায়সারা দায়িত্বপালন,ডাক্তার আসেই না,দুই একটা ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিলেও প্রায় সব ওষুধই বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।
পরিক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রগুলো বিকলঙ্গ হয়ে পড়ে আছে।দায়সারা ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এই হাসপাতালের ডাক্তার,নার্স ও কর্মচারীরা।হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন ২ টি তার মধ্যে বিকল হয়ে আছে ১টি,৫টি ইসিজি মেশিনের মধ্যে ৩টিই বিকল,সেমি অটো বায়োমেট্রিক ২ টি মেশিনের মধ্যে ১ টি বিকল হয়ে থাকলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এমনকি সেলফ কাউন্টার মেশিনটি বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে আছে।
উলিপুর হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সের কর্মকর্তা ডা: হারুন অর রশিদ সাংবাদিক কে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন,
মাত্র ৪ জন চিকিৎসক দিয়ে এতো বিপুল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সের জনবল সংকট ও উলিপুর উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উলিপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ও উলিপুর ৩ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জননেতা আব্দুস সোবহান বেসরকারী এক টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বলেন আমি আগামী দশ কর্ম দিবসের মধ্যে একজন হলেও ডাক্তার এই হাসপাতালে এনে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।পরে ডিজি কে ফোন দিয়ে উলিপুর হাসপাতালে কয়েকজন ডাক্তার কে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে অনুরোধ করলে স্বাস্থ্যের ডিজি আব্দুস সোবহান কে আশ্বস্ত করেন।।
Tags
সারাদেশ