২০০ জন রক্তদাতার রক্তদান, ১৪০ জনকে বস্ত্র বিতরণ — উলুবেড়িয়ায় নজিরবিহীন মানবিক উদ্যোগ



অতসী মন্ডল, উলুবেড়িয়া, হাওড়া: উৎসবের মরসুমে রক্তের চাহিদা বেড়ে গেলেও সরবরাহ প্রায়শই সংকটজনক হয়ে ওঠে। সেই ঘাটতি পূরণে রাজ্যের মন্ত্রী শ্রী পুলক রায়ের নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্র তৃণমূল যুব কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত হলো রক্তদান ও বস্ত্রদান শিবির।

শ্যামপুর ১ ব্লকের ধান্দালী গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহিনীমোড়ে অনুষ্ঠিত এদিনের কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্র তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সেলিম মোল্লা। শিবিরটি উৎসর্গ করা হয় প্রয়াত জনপ্রিয় নেতা শ্রী দীনেশ মন্ডল ও শ্রী প্রদীপ মান্নার স্মৃতির উদ্দেশ্যে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১৩ সালে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জন দরদী নেতা প্রয়াত শ্রী দীনেশ মন্ডল ও শ্রী প্রদীপ মান্না। 

উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র হাসপাতাল ও উলুবেড়িয়া সঞ্জীবন হাসপাতালের সহযোগিতায় আয়োজিত শিবিরে বিপুল সাড়া মেলে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান করেন। পাশাপাশি প্রায় ১৪০ জন দুস্থ মানুষের হাতে বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মন্ত্রী শ্রী পুলক রায়। প্রধান অতিথি ছিলেন হাওড়া জেলা পরিষদের সভাপতি কাবেরী দাস এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অতীন্দ্র শেখর প্রামানিক ও শ্যামপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৃন্ময় মান্না সহ উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান, জনপ্রতিনিধি, যুব সমাজ, সামাজিক কর্মী, এসএইচজি গ্রুপের মহিলা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। রক্তদাতাদের হাতে নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হাওড়া জেলা গ্রামীণ যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, “প্রয়াত দীনেশ মন্ডল ও প্রদীপ মান্না ছিলেন এলাকার দুই নিবেদিতপ্রাণ নেতা। তাঁদের স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানাতেই এ ধরনের মানবিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।”

অনুষ্ঠানে উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রামকৃষ্ণ গের ও ধান্দালী গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুভাষ মন্ডল জানান, “মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই প্রয়াস শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং আগামী প্রজন্মকে মানবসেবার পথে অনুপ্রাণিত করবে।”

স্থানীয় রক্তদাতা শ্রীমতি রানু মণ্ডল বলেন, "রক্তদান করলাম, খুব ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে কারও প্রাণ বাঁচাতে পারব।”

শিবিরে অংশগ্রহণকারীদের আশা, এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত হলে উৎসবকালে রক্তসংকট অনেকটাই কমে আসবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post