এনজিওর মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, রাজমিস্ত্রি থেকে হলেন কোটিপতি
পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত ছাকাত প্রামানিকের ছেলে দরিদ্র পরিবারের সন্তান নুর আলী (৪৭)। করতেন রাজমিস্ত্রির কাজ। জমিজমা ছিল না তেমন। বাবাও ছিলেন দিনমজুর। বাড়ি বলতে ছিল আধাপাকা টিনের ঘর। অথচ ১০ বছরের ব্যবধানে তিনি বনে গেলেন কোটিপতি । শুধু তাই নয়, আধা পাকা টিনের ঘরের জায়গায় এখন বিশাল তিনতলা আলিশান বাড়ি। যার মূল্য কোটি টাকার উপড়ে।
অভিযোগ উঠেছে, এনজিওর ব্যবসা করে বিভিন্ন মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে তিনি এত সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার প্রতারণার শিকার হয়ে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও সমবায় অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত নুর আলী পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত ছাকাত প্রামানিকের ছেলে। তার সঙ্গে জড়িত স্ত্রী লাইলী খাতুন (৩৩)।
অভিযোগে জানা গেছে, নুর আলী দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় লেখাপড়ায় খুব একটা এগুতে পারেননি। বছর দশেক আগেও সে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। তার বাবাও দিনমজুরি করতেন। একপর্যায়ে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন নুর আলী। এভাবে চলার এক পর্যায়ে ২০০৮ সালে ‘বোঁথড় ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে একটি এনজিও চালু করেন। এরপরই যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান নুর আলী ও তার স্ত্রী। কিস্তির মাধ্যমে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি ও ঋণদান কার্যক্রম শুরু করেন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আসতে থাকে নগদ টাকা। সেইসঙ্গে লভ্যাংশ দেবার নামে সাথে নেন কয়েকজন অংশীদার। যারা এনজিওটিতে লাখ লাখ টাকা লগ্নি করেন। সবমিলিয়ে কয়েক বছরেই ফুলে ফেঁপে ওঠে নুর আলীর জীবন জীবিকা। এর মধ্যে ২০১০ সালে একতলা আধা পাকা টিনশেড ঘরের জায়গায় কোটি টাকা খরচ করে তিনতলা আলিশান বাড়ির কাজ শুরু করেন নুর আলী। ব্যাংকেও জমতে থাকে টাকা। এর মধ্যে নিজ এলাকায় কিছু জায়গাও কেনেন প্রায় ৩০ লাখ টাকায়।
এনজিওটির দেয়া তথ্য মতে, ২০২৪ সালে তাদের মোট আয় ৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৪৭ টাকা। আর ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত তাদের দায়-দেনা মুলধন ২৬ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৯ টাকা।
No comments